আমাদের লেখা পাঠান careofsahitya@gmail.com-এ। ভালো থাকুন সকলে। চলতে থাকুক কলম। বলতে থাকুক শব্দ।

প্রচ্ছদ

A SAHITYA-ADDA Initiative C/O:sahitya A BLOG MAGAZIN STAY WITH US THANK YOU
bloggerblogger

রবিবার, ১৮ মে, ২০১৪

সম্পাদকীয়ঃ জ্যৈষ্ঠ, ১৪২১


“সুহৃত্ মিত্র অরি উদাসীন মধ্যস্ত দ্বেষ্য বন্ধুষু ॥
সাধুষু অপি চ পাপেষু সমবুদ্ধিঃ বিশিষ্যতে ॥৯॥”

-    যিনি সহৃত্ মিত্র শত্রু উদাসীন মধ্যস্ত মত্সর বন্ধু ধার্মিক ও পাপাচারী এবং সকলের প্রতি সমবুদ্ধি তিনিই শ্রেষ্ঠতা লাভ করেন।

জ্যৈষ্ঠ,১৪২১    প্রচ্ছদ শিল্পীঃপুস্পেন্দু অধিকারী      মে,২০১৪
            সারাদেশ জুড়ে সরকার নির্বাচনের মহা-কর্মযজ্ঞ সবে শেষ হয়েছে। ত্রিশ বছর পর ভারতবাসী কেন্দ্রে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ এক সরকার পেয়েছেন। এই বিষয়টি নিতান্তই আশার ইঙ্গিতবাহক। এতদিন কার জোট-সরকার যেকোনো কর্মকাণ্ডে শরীকী দলগুলোর উপর দোষের বোঝা চাপিয়ে চুপচাপ বসে থাকার কুঅভ্যাস থেকে দেশ ও দেশবাসী হয়তো মুক্তি পেল। তবে কোথাও কোথাও বিরোধী শূন্য গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা পেল যা রাজনীতির পক্ষে অত্যন্ত নেতিবাচক বলেই মনে হয়। গণতন্ত্রে রাজনৈতিক তরজা অত্যন্ত জরুরী। এর ভিতর দিয়ে মানুষ তার মতামত প্রকাশ করতে পারেন। শাসক দলের গঠনমূলক কাজে বিরোধীদের সহযোগিতার হাত যেমনটি কাম্য, ঠিক তেমনি জনগণের প্রতি অসৌজন্য, অভব্যতা, কুশাসনের প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়াটা গণতন্ত্রের পক্ষে মঙ্গলজনক। কোটি কোটি মানুষের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান সুনির্দিষ্ট করতে শাসকের সাথে সাথে বিরোধীদেরও সদর্থক ভূমিকা থাকা দরকার। যেখানে বিরোধীহীন, রাজনৈতিক কারণেই স্বৈরাচার আসাটা খুবই স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে সরকারকেই সজাগ থাকতে হবে। আপামর জনতার আশা মেটানোর জন্যে যে বিপুল পরিমাণ জনাদেশ তারা পেয়েছেন মানুষের প্রতি যেন তার সৎ ব্যবহার হয় তার খেয়াল রাখতে হবে।

উৎকট বৈষম্যের যে বিষুবরেখা সর্বত্র ঘুরে বেড়াচ্ছে তার দংশন থেকে দেশ ও জাতির মুক্তি ঘটাটা অত্যন্ত জরুরী। শোষণ অপশাসনের দুর্মর ধারাবাহিকতার যে ইতিহাস চলে আসছে বেশ কিছু কাল থেকে তাতে দেশ স্বাধীন হয়েও যেন মনে হয় আমরা নিজেদের কাছে পরাধীন। সংবিধানের মৌলিক অধিকার রক্ষা করার দায়িত্ব কার? সরকার আপামর জনগণের পিতা হিসাবে সেই দায়িত্বটুকু গ্রহণ করুক। একটি মানুষও অনাহারে থাকা শিকলের একটি দুর্বল লিংকের মতো। সমগ্র জাতির উন্নতির জন্যে যে ওয়েক-আপ-কল পেয়েছেন ভারত-সরকার অতঃকিম তার যথার্থতা প্রয়োগীকরণ একমাত্র বাঞ্ছনীয়। সমগ্র অণুরেণু সঙ্ঘবদ্ধ মানুষেরা ‘মনুষ্যত্ব’ এই চরিত্রলক্ষণের প্রতি জাগ্রত হোক এই কামনা করি।

 সমাজের এই আশা-ব্যঞ্জন পূরণে সাহিত্যিকের কলম সদর্থক ভাবে ব্যবহৃত হোক এটাই কাম্য। দল-রঙ-বুর্জোয়াতন্ত্র নির্বিশেষে অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলুক আমাদের কলম। এটা আমাদের নৈতিকতার পরিচয়বাহী। যেকোন অন্যায়ের প্রতিবাদে আমরা সবাই যেন একসাথে সোচ্চার হয়ে উঠি। এতে কোন রাজনৈতিক দলঘেঁষা হওয়ার প্রয়োজনীয়তা নেই। 

 ফিরে আসি C/O:সাহিত্যের কথায়। প্রথমসংখ্যা প্রকাশিত হবার পর আপনাদের সকলের কাছ থেকে যে অভূতপূর্ব সাড়া আমরা পেয়েছি, তাকে পাথেয় করে দ্বিতীয়সংখ্যা প্রকাশের সাহস রাখলাম। এই সংখ্যায় আমরা পাশে পেয়েছি আরও কয়েকজন গুনি মানুষদের। সবাই লেখা পড়ুন। লেখা পড়ে মত প্রকাশ করুণ গঠনমূলক ভাবে নিজের মতো করে। গণতন্ত্রে বাক স্বাধীনতা আছে আর আমরা C/O সাহিত্যের সকলে তাতেই বিশ্বাসী।

পরিশেষে, ভোটযজ্ঞের শেষে আমরা নির্বাচনে জিতিয়ে নিয়ে এসেছি যাদের তাদের কাঁথে দায়িত্ব চাপিয়ে অনাগত ভবিষ্যতের পরিণতির অপেক্ষায় দিনগোনা ছাড়া আর অন্য কোন উপায় নেই।      

               
                                                                                                                                সম্পাদকীয়
                                                                                                                          পবিত্র আচার্য্য
                                                                                                                             ৩রা জ্যৈষ্ঠ ১৪২১

কবিতাঃ ফাঁদের থিওরেম / বারীন ঘোষাল


তোমাকে দেখলেই আমার চোখ বিদেশী হয়ে ওঠে
আল্লা মাল্লা করে ফাঁদের থিওরেম থেকে বেরিয়ে যেতে চায়
যেটুকু লেন্সে ধরে
                    চশমায়
                            মনিপটে
বাচ্চাটার চোখ অন্ধ রেখে গান পেতে থাকে
#
বুন বুন বুনন নাখোলা পাহাড় থেকে স্লি পিং পং পতন রোধের ঘুমচুড়িয়াঁ কন্যারা মেরুকে মেরুবোধ থেকে আলাদা বায়ুবিনা ভাষার সুভাষে খোলামখুনে
#
                             চাপাকল শব্দ করে
                       ডিস্কো
                 আইপড
        কোমর বন্ধনী
কপালে সিঁদুর বিন্দু

বিন্দুর গ্রাফিক্স নিয়ে এবারে ভাবতে বসি চলো 

কবিতাঃ অস্বীকার করো / প্রত্যুষ বন্দ্যোপাধ্যায়


এতোসব কিছুর পরও একটা থেকে যাওয়া থাকে
যেটা আমরা কেউ-ই পারছি না
তুমি কুয়াশার ভেতর হাতসাফাই
প্র্যাকটিস করছো
আমি নিজের চোখ নিজেই বেঁধে
খুঁজে চলেছি রূমাল
অপেক্ষা মানে কী শুধু বালিঘড়ি
শুধুই ক্যালেন্ডার অথবা নক্ষত্রদোষ !
এমন অনেক মেঘ তো আকাশে থাকে
হাওয়া আটকে দেয়
বৃষ্টি ঝরে না
সিগারেটের ছাই ভেঙে ভেঙে পড়ে
পুরো সিগারেটটার মাপ আর
কিভাবে ফেরত পাই , বলো !
যে কটা রাস্তা দিয়ে হেঁটে
আমরা কাছাকাছি এসেছিলাম --
তার থেকে অনেক কম দূরত্বের পথ
আমরা আর পেরোতে চাইছি না , এখন
দ্যাখো
দিগন্ত বিস্তৃত এই ফাটলের মধ্যে
পোকা হয়ে নিঝুম থাকার চেয়ে --
এসো , জমি-বাড়ি দালালীর কুশলী আদবকায়দায়
নিজেদের রপ্ত করে তুলি
অথবা ঘুমের ওষুধ ভোলা কয়েকটা রাত
তুমিও বাঁশীর সুরে দুলে ওঠো
শঙ্খলগ্না সাপের বশ্যতায়
আমাদের পুড়ে যাওয়ার
আর কোনও দায় বা দায়ীত্ব থাকবে না

তবুও কিছু প্রশ্নের উত্তর মেলে নি
আমি নিষ্পলক, দেওয়ালে, কার্নিশে,
উঠোনে,গলিতে,অনবরত চেঁয়েছিলাম

কবিতাঃ কবে যেন ফলের ভিতর ঢুকে পড়েছে অনিদ্রা / কচি রেজা


কবে যেন ফলের ভিতর ঢুকে পড়েছে অনিদ্রা 
কেউ আমরা তাই অনেকদিন ঘুমাই না 
এতগুলো ঋতুর পা দেখে হাওয়ায় কাঁপছে সরুহাঁস
কাচ টিপের কথায়  তুমি কি  বোতাম ছেঁড়া জামা গায়ে 
দাঁড়াও আয়নার সামনে 

উড়ে যেতে দেখ লক্ষ লক্ষ  শিমূল ?

কাঁধ ভর্তি ব্যাগমেয়ে ঘাস , বাম স্তন
মনে পড়ে--বহু আগে নিদ্রাহীন চোখ
  রাত জাগে কেমন টলতে টলতে 

 পা ভিজলে সেই মুহূর্তে ডিপ্রেশন হয় তোমার
 যে মূহুর্তে আমি মোমের খনিতে  ভুল করে বেড়ে উঠি 
আর  চশমা ছাড়া বেশি ভিজি না 

দাঁতই বরং দেখুক কেমন হাঁটা শিখেছে আলজিভ

কবিতাঃ দাব / বিদিশা সরকার


অভিবাদনের টুপি আর বদান্যতার হাসি গুলে শীতল পানীয়
কেন কেউ বোঝে না
সকাল প্রাপ্তবয়স্ক হলে রোদ্দুর পুড়িয়ে দেয়
তমাল প্রিয়তা -
ওদের পুড়তে দেখলে
আমার বাসন্তী ইচ্ছাগুলো
সূর্যমুখীর দাহ্যতা

এবার বৃষ্টিতে ওরা চালে ডালে নবান্নের ঘ্রাণ
এখনও ডাকলে কেউ সাড়া দিই
সন্ধ্যাপিসীর মত
সমস্ত ঋতুই ছিল যার কাছে
সহনশীলতা
টেরাকোটা --

মুখাগ্নির জন্য ছিল একা ডোম
দূরত্ব বাঁচিয়ে

আমার যাপন !

কবিতাঃ যে সমস্ত বাঁকের শীতল / কৌশিক বিশ্বাস


ফুরিয়ে গেছে যে বাঁক তার থেকে সরে আসছে ছায়া
বেহিসেবি সময়ের আর জাগতিক চাপে না ।

গন্ধের কত আপন থেকে যায়
অসংখ্য মুহূর্তের পাখিসব । যেটুকু চলে গেছে
ততখানি নিহত আমার ...

বিকেলের দিকে কতখানি পা
কতদুরে যাব যাব ভাসে , বাঁকের শীতলে যে ছায়া
অভিমুখে তার ততখানি গণ্ডী আঁকা থাকে ।

নিয়মের মত তীব্র জুড়ে থাকি
ফুরনোর আগে সামান্য অজুহাত ।

কবিতাঃ উহাদের সী-বিচ / অনুপম মুখোপাধ্যায়



সী-বিচে তক্কো করছে
ভাসুর
ভাদ্রবউ
উহাদের
কড়া নীল টুপি
নাক  উঁচু সাদা মেঘের এফেক্ট
ঢেউয়ে
আমাদের অপরিসীম বিষয়ের বালি
অহ এবং রহ এবং হৃদয় এবং স্পন্দন
ছ  ড়ি  য়ে  ছে
আমরা নড়ে ওঠার আগেই
উহাদের
সংক্রামক বিকিনি
ছোঁয়াচে কথা
আর
ক্রিয়া

কবিতাঃ সেই সেখানেই এলাম / প্রলয় মুখার্জী


মরা মাছ জলে ভাসে
মরা মানুষ জলে ভাসে
সাঁতারের কাছে মৃত্যুর কোনো দায় নেই।

তোমার মুখ আঁকতে বলছ
আমি বলিরেখা এঁকে দিলাম
তুমি দিনের শেষে বেঁচে থাকো প্রেমিক তো চাইবেই

জলে ঢিল ছুঁড়লে কেঁপে ওঠে জল
ভয়ে ছোটাছুটি করে গোটা পুকুর
অজস্র ঢিল ছোঁড়ার পর জ্বরে কেঁপে উঠলে মাথা
জল কপাল জড়িয়ে বলে সেরে ওঠ ভাই।

বলছ রঙ জানতে হলে অন্ধ হতে হয়
তুমি ছোট্ট ঘরে আলো আসতে দিচ্ছ না
আমি পালাতে গিয়ে শুনলাম
জানলার পাশে ছোলাচারা রাখার গান
যে আলোর দিকে বেঁকে গেছে নিজে থেকে

ঘুমাতে যাবার আগে তোমায় দেখি
পরিচিত পাখি মুখ ফাঁক করে দানা চাইছে
আমি ঝাঁপিয়ে পড়ছি কোমরের নীচে ঘাস সরিয়ে
আসলে আমার ঘর তোমার পেটে তিল তিল করে বাড়ছে।

হাত পা বেঁধে সেই নদীর বুকে ফেলে দিলে
নদী এত ভালবাসি নদীই আমায় ডুবিয়ে দিলো
তুমি বলছ মৃত্যুর কাছে সাঁতারের কোনো দায় নেই

কবিতাঃ আগুনের গণিত / পবিত্র আচার্য্য


ঝনঝন শব্দ-ভঙ্গুর একচিলতে শ্বাস। অনাবৃত যন্ত্রণা । মৃত্যুর লোকাসে প্রসববেদনা অনিবার্য। মৃতেরা উঠে দাঁড়ায়, কিছুটা পথ হাঁটে জীবনের সাথে। শরীরী-কঙ্কালের সাথে মিশে থাকা মাংসের মত।

হাজার ঘেরাটোপ    এলোমেলো ঘোরান ঘোরপথ
খোলা দরজার খোঁজ.........
অনুসিদ্ধান্ত আমারই
                     বাইরে কাচের দেওয়াল
ভেতরে ফুঁসরে ওঠা বদ্ধশ্বাস
প্রতি মুহূর্তে ডিম ফুটে জন্মাচ্ছে ফুটফুটে মৃতরা 
যেমনটি ভেঙ্গে পড়ে অযাচিত নিষিক্তভ্রূণ
শীৎকারনিবন্ধে নিঃস্পৃহ স্বাধীনতা

এখনো সময় আছে কি জীবিতের ওষ্ঠ চুম্বন? বালির তিক্ত খেয়ালে বানানো চোরাবালি। শূন্য চোখ, বিবর্ণ-ধ্বংস-মুখ। দুই পায়ে দৌড়ে বের হওয়া গেল না। যেখান থেকে ফেরার যাত্রা শুরু করেছিলাম আকারহীনতা চেয়ে। 

সূর্যের সামনে কিছুই নতুন নয়
শুধু একটা রেখা দাঁড়িয়ে রেসিংট্র্যাকের মত
ছুটছে পাগুলো          
ব্যথার কোলাজ বোঝে
পথচারী                   জুতোর তলায় লাগানো পিন
মরণকামী                মৃত্যুহাত অচ্ছুৎ যাদের
মরণ গিলছে আজ হাজারো জীবনের দীর্ঘশ্বাস

আগুনের  ভাবাবেশকর চুম্বন। সিগার-জ্বালানো বিজড়িত ধোয়া-বলয় গিলছে জিঘাংসা। ফুসফুস জুড়ে নেশারা উড়ছে পতপত করে। যেদিন থেকে আগুনের গণিত শিখেছে মানুষ, জ্বলতে আর জ্বালাতে জেনেছে ফুলের পাপড়িগুলো।   

চারিদিকে আগুন জ্বলছে বলেই তো এতো ভয়!
ঠোকাঠুকিতেই আগুণ        এটা সত্য  
ধোঁয়ার কুণ্ডলী পাকানো সিগারেট ভলক্যানো জ্বলছে
ব্যথার আঙ্গুলগুলোর ফাঁকে
আমরা খোঁজ নিই না
                      জীবিত অথচ মৃতের
কবরের নিচে চলে যাওয়া গোপন হত্যাকারীর     

স্বপ্নের গভীরতায় বাস্তবের ছুটি। জঠরের আগুন, হিংসের কুঠার নিয়ে আমরা খুঁড়তে পারি দীর্ঘ ঘুমন্তআগ্নেয়গিরি। আমরা প্রকাশ করতে চাই উল্লাস, কান্নারা ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টি নয়, মুষলধারে পরবে যখন। চাহিদারা আগুন হয়েছে কবেই।

                      

কবিতাঃ হোটেল কোলকাতা –৬ / ঋষি সৌরক


আলতো গাল আর অসমসাহসী ঠোঁট
নিষ্পাপ চাদর লিঙ্গিত হচ্ছে চুলে প্রতিবন্ধসমূহ এড়াতে চাওয়া জনৈক মৃত্যু
বা একটা সাজানো মিছিলে তোমার নিরামিষ নাম নেই গন্ধ নেই
শহরের বিচ্ছিন্ন উপকথাগুলি থামায় পিক্সেল

সিজনের চেয়ে সিজনাল পাপেরা সমান্তরাল
১২ই ডেনিম ছাড়িয়ে ১২ই জংলি পাথর
বুকের ধুলো নড়লো না

বৃষ্টিটাকে জোরালো ইস্যু করে দিলো


আমার মূত এতো গাঢও নয় যে গড্ডালিকার জলে তাকে আলাদা করা যায়

কবিতাঃ অপেক্ষা / সজল দাস


ওই যে লোকগুলো, রুমালে
                   মুছে নিচ্ছে মুখ
          টোকা দিয়ে
ছিটকে দিচ্ছে ঘাম বিন্দুটুকু

ওরা কেউ আপন তো নয়...

কিছু পথ ওয়ান-ওয়ে
যাওয়াটুকু, শুধু পিঠটুকু
          ভেসে থাকে আলগা বাতাসে

শহরের কালোতম লোকটা
ঢিল ছুঁড়ে আলো নেভায় রোজ
আর
জন্মান্তরে বিশ্বাসী কিছু পাগল
ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে গলির মুখে


আজ হয়তো উনি ফিরবেন...

কবিতাঃ তিনটি কবিতা / অব্যয় অনিন্দ্য

কবিতা-১
কলির রাধা

ভোঁ করে বিকেলের সূর্য্যকে ভেংচি দিয়ে উড়ে গেল প্লেনটা
প্লেনের লাল আলোতে চলন্ত শব্দটাকে দেখছিল জ্বানালা বধু 
শা শা করে রয়ে-সয়ে আসে, বাতাসের বুক ভেঙে-চুরে
হিস ফিস করে মিলিয়ে যায় কম্পন রেখে রেখে যায় 

প্লেনটা চলে যায়, শব্দটা কিন্তু থেকেই যায় 
রাতে একা বিছানায় শব্দটা বেশ শব্দ করে কাকে যেন খোঁজে
ওকে ঠাণ্ডা জল খাইয়ে একসময় ঘুমিয়ে পরে মেয়েটি,
শব্দটা শীতল হয়, ঘুমায় না নিরন্তর খুঁজেই চলে

যাকে খোঁজে সে রিয়াল আনতে গেছে যৌবনের দামে 
চিঠি লিখেছে সেখানে সে বুর্জ তৈরি করে,
ছবিও দিয়েছে; বোঝা গেছে - বুর্জ মানে বিরাট উঁচু দালান।

চিঠির উত্তরে মাথার ভেতর লাল অক্ষর চিঁ চিঁ করে উঠল-
বুকের শব্দটাকে ঐ প্লেনে তুলে দাও; শব্দদূত দেখে আসুক
একাকী রাতের হাঁসফাঁস কিভাবে মরুর বুকে বুর্জ হয়ে জ্বলে;
মেপেই আসুক রিয়াল অপেক্ষা বুকের উষ্ণতা কত বেশী কম।

হঠাৎ বাদিকে টেবিলে রাখা গোলাপটাতে চোখ পড়তেই -
প্রতিবেশী ছেলেটার দেখানো নতুন ঘরের স্বপ্নের বুর্জ হেসে উঠল।

মরুবুর্জ আর স্বপ্নবুর্জ কলির রাধাকে নিয়ে এখন শ্যাম-কুল নৌকায়;
কে জিতবে - তা আজ রাতে বুকের শব্দটাই বলবে।

                    
কবিতা-২
পাসওয়ার্ড

ভালবাসার খেলায় চাতক আর এখন জিততে পারে না; খরগোশ সব লুটেপুটে নেবার পর কচ্ছপও কিছু পেতে পারে; কিন্তু চাতক এযুগে নৈব নৈব চ।

টেরামাইল গতির খরগোশগুলোর কাছে সব আপেল, টমেটো মাইক্রোসেকেন্ডেই লাউ হয়ে যাচ্ছে; কোন কূটনৈতিক চুক্তিই থামাতে পারছে না স্ফীতির বিবর্তন।

আখের ছিবড়া নিয়ে আমি কী করব। দোহাই তোমাদের, ঈশ্বরের সফটওয়্যারটা হ্যাক করে সব আপেলে পাসওয়ার্ড দিয়ে দাও।

কবিতা-৩
সাদা

দেয়ালটাকে প্রতি শনিবার সাদা - আরো সাদা করি
কোনদিন যদি দেয়ালটা মন হয়ে যায় 
মসজিদ, মন্দিরের দেয়াল সাধারণত সাদা, ধবধবে সাদা
ওই শুভ্রটার মাঝেও দেখা যায় শকুনির লাল জিহ্বা
হিংসার হোলি প্যান্ডোরার নয়া বাক্স    

কারো কারো ঈশ্বর মনে হয় বর্ণান্ধ বা একরঙা

কবিতাঃ হারালাম-টি / অসিত ঘোষ


মধুছাপ রেখো যা দেখিনি আর।এসো,ছিলাম না যে অখণ্ডে।দুলুক খানিক দুজনের গভীর - ঢালু পেলে গড়ানো নিচে,নি-চে ! দিও,দি-ও অজানি তিমিরের হিরণ দৌড়।মুছে নিও আমার দলা দলা জমাট খালি।নালামুখটা ধোরো,হাত না,বোলবোলা ঠোঁটের শূন্যে-ঘুর জালে,পেলেই জানান দিও ঘুমন্ত জলে মার্বেল-ফেলার ডুবুং ডুবুং কয়েক কলির মতো।ভাঙন ভাঙন জাগন দেয়াল,তুলুক পাল !

এই উত্তম,মধ্যম ও অধম এবং পরম 'হারালাম'টি দুজনে জানব -  বজরার খুপি পেরিয়ে দেখা না-দেখার খানাখন্দ ধরে,অটুট দাঁড় । হাত-পা,পরত না-কাটে টুকরো টুকরো অজাদুর ঠোকায়।
অগুনতি জীবাণুর বারংবার পুনর্জন্মের মতো এই মা-গো বুক - তোমার যুগযুগান্ত তপতপে গাছময় হেঁসেলে - কোণার টেবিল থেকে একলাফে চলে আসব কলম হাতে বিদ্যেছাড়া।

কবিতাঃ ফেসবুক,হাত আর পাঁচিল / সেলিম উদ্দিন মণ্ডল



এই ফেসবুকটা এক জানালা । বাইরে একটা বিরাট পাঁচিল । আর পাঁচিলে অজস্র হাত।এই পাঁচিলে 
পাঁচ থেকে আশি সকলে আমরা নিয়ত মুততাম,থুতু ফেলতাম।অবশ্য এখনও মুতি ,থুতু ফেলি। পাঁচিলটা ক্রমশ এগিয়ে আসছে জানালার কাছে।বাইরেটা আরও নিকট হচ্ছে।পাঁচিল বসে থাকা হাতগুলো গলা টিপে ধরছে।অথচ এই হাতগুলোর জন্যই আমরা জুকেরবার্গকে ধন্যবাদ জানাই।রঙিন পাখির ওড়াওড়ি দেখি। দিনরাতের মধ্যে বিভাজন মুছে সবুজ আলোয় গ্রীষ্ম স্নান সারি। জানালাগুলো বড় হয়।ঝড় উঠলে ধূলো ওড়ে। ভাবি এবার... জানালায় পর্দা টাঙাবো টাঙাবো                                                                          করে অনেক মুতের গন্ধ শুঁকে নিলাম।

কবিতাঃ মৌলি রোদ হয়ে ঝরে পড়ছে / সুপ্রিয় মিত্র


হিমালয় স্থির সময়ে দিন গুজরান বর্ষা এসে পড়ে
সমস্ত দুঃখ যেন প্রাচীন কচ্ছপ ।
চলন আপাত স্থবির ,
গতকাল যার দংশনে করুন হল ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় প্রাঙ্গন
গুলজার মেঘ দেখে আরও গভীর করে ক্ষত ।

এমন সংকটময় দিনে বৈকুণ্ঠপাড়ার মৌলি
রোদ হয়ে ঝরে পড়ে উত্তরের ঘরে।
সেদিক আপাতত বৃষ্টিচ্ছায় ।

বাবা নেই। মা খবর রাখেনা - কী
ভুল টাই না করে চলেছে মেয়ে !
রোদে পুড়ে ইতিহাস হয়ে যাচ্ছে দলা-পাকা মাটি ।
কেউ ওকে ধরতে পারে না কেন ?
আমি তো পারতাম কয়েক হাত দূরের পর্দা ছেড়ে দিতে ,  পারতাম বন্ধ করে দিতে
তিনটে জানালাই।
অথচ বৈকুণ্ঠপাড়ার ছিপছিপে আঁশবিদ্ধ মেয়েটাকে
কে বলবে -
 বাড়ির অন্য ঘরে এক দুঃখ খেকো রাক্ষস , রোজকার ঝরে পড়া নোট করে নিচ্ছে খাতায় ...

অন্যদিকে ডাইরির এক একটা পাতায় যেই  ইতিহাস প্রস্ফুটিত হচ্ছে
এক একটা পাতা উল্টে দিচ্ছি
ক্রমশ
লুকিয়ে নিচ্ছি
কোন কোন রোদ আছড়ে পড়ল আগে ....

কবিতাঃ দেখো, দীর্ঘ ট্রেনের মতো / রাসেল আহমেদ




দেখো
দীর্ঘ ট্রেনের মতো শিরা বেয়ে দৌড়ে যাচ্ছে শিংঅলা ষাঁড়

হৃদপিণ্ডের কাছে এসে যারা যুগ যুগ ধরে জমে যাচ্ছে বরফের সুন্দর ভাস্কর্যের উদাহরণ হয়েচেয়েছিলাম তাদের মতো তোমাকেও ছাঁচে ফেলে অমন দাঁড় করিয়ে রাখব দিনের পর দিনজোয়ারের পর জোয়ার

দেখো
দেয়ালের নাভিতে গেঁথে থাকা ঝকঝকে হাস্যমুখী পেরেকদ্বয়মধ্যখানে ফাঁদে পড়ে আমার হাতখানা কাঁপছে খনিজন্মা আঙটি সমেত

কবিতাঃ সংঘাত / আকাশ দত্ত


নিজেকে
মেরে ফেলার আগে
জানলায় ঢেকে রেখো পর্দা

ঘুম দিয়ে
ভিজিয়ে দিও বালিশ,
সূর্য ডুবিয়ে রেখো বালতিতে
অমানিশার

মৃত্যুঘোষনা অনেক কিছু বলে!
অবক্ষয়ের কথা..
আত্মত্যাগের কথা...

এটুকু
জানো না?
অথচ নান্দনিক!
হুহ্

হে অনিশ্চিত,
তোমার তো মরেও মরা নাই
কাদম্বিনীর মত!!

কবিতাঃ মা-জননী / তন্ময় ভট্টাচার্য


এতদিন মুখ ফুটে কথা বলিনি
ভেবেছি - সময় হলে পাল্টে যাবে

সময় পাল্টে গেছে। এখনও তোমার
প্রেমাস্পদের কোনো রাখ-ঢাক নেই

লজ্জায় আমরাই চোখ ফেরালাম
যেদিকে তাকাই,শুধু অর্থনীতি

নাহয় গরিব হয়ে জন্মেছিলাম
না হয় পতাকা তুলে পথ হাঁটিনি

তা বলে অন্ধ হতে বাধ্য তো নই
প্রতিবাদ করলেই থুতু ছেটাবে

তোমার প্রেমাস্পদ। মা-জননী,

এভাবে রাজ্যে গণতন্ত্র হবে!

কবিতাঃ উত্তর মেলে নি / বিক্রম


আরো কিছু প্রশ্নের উত্তর মেলে নি
আমি নিষ্পলক দেওয়ালে,
কার্নিশে উঠোনে গলিতে অনবরত চেঁয়ে ছিলাম


ঠিক গোলাপের মতো
বড় শুদ্ধ,
 ঠিক গোলাপের মতো,ঠিক.......


প্রতিধ্বনী ফিরে ফিরে এসেছে
এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে
ও প্রান্ত থেকে এ প্রান্ত শূন্য ভেঙেছি
নিয়ম ভেঙেছি,স্বপ্ন ভেঙেছি,সত্যি ভেঙেছি...


প্রচন্ড প্রেম স্বাভাবিক নয় ঝডের মতো
ওলট পালট করে সব সমীকরন
আমার চোখের নিচে র্নিদিষ্ট
কোনো জলাশয় নেই, বুকে অজস্র ফাটল


মুহুর্মুহু সং করেছি, ঢং করেছি,

কীর্তি ভেবে এবং করেছি যা না করলেও চলতো

কবিতাঃ তিনটি কবিতা / সুমন্ত চ্যাটার্জী


১. উন্মাদ

কংক্রীটের ফুটপাত থেকে
বহুযুগের সাধ ছিল আইফেলের চূড়ায়!


নেহাত আইফেল না হলেও
রবীন্দ্রসেতু’র শীর্ষবিন্দুতে ...
যেখান থেকে সবাইকে ছোটো দেখায়,
খুব ছোটো ...
হুশহাশ গতির ইঁদুরদৌড়
এক পা কবরে রাখা কাঁচি
কিংবা তপ্ত সবুজের যন্ত্রাংশ
রোজই কারশেডে আগুন উপচায়
ঠুনকো মোমবাতির সলতে ...


এক পা-এক পা করে
বাঁধন বেয়ে ওপরে উঠতে থাকি
সব ফুৎকারে উড়িয়ে
শৈশবের মত


নীচে লম্বা মই-ফায়ার ব্রিগেডের গাড়ি
কৌতূহলী চোখের ছয়লাপের দিকে
যে কাকতাড়ুয়া আমায় দেখে হাসে,
আমি তো নই ... কোনো বদ্ধ উন্মাদ!



২. ভার্টিগ্যো

লাল ফিতের নরম নীচ থেকে
আলগা ধাতুর চাপেই
জোঁকের মত জাপটে ধরে আলোরাত,
অসাঢ় খোলসের থাম বেয়ে
রক্তের মত গাঢ় অ্যালকোহল-
কুঁকড়ানো ভাঁজ পেরিয়ে ঘাড় নামাতে পারিনা
পায়ের পাতায় গজানো ছত্রাকে
গুঁড়ো গুঁড়ো ঝুপড়ি একাকার,
পাছে স্যাঁতসেঁতে শ্যাওলার ওপর
আকাশ ঘুরে যায় চাকতির বাইরে!



৩. শাহজাদীর তীরে

দূর থেকে তাজমহলের নিঃশ্বাস
অহংকারী মনে হয়,
অথচ ধোঁয়া সরিয়ে গেলে
খোলামেলা হাসি খোলামেলা পোশাকে
কাঁচের গ্লাস উপচে যায়


পেতে চেয়েছি কুয়াশার স্বাদ
ভ্যানিটি ব্যাগের রেলট্র্যাকে


সুতো হয়ে যাওয়া সড়ক
আর সড়কের ছুতো বেয়ে
যাতায়াত করে মড়ক মিছিল
কঙ্কালসার জীবাশ্মদের
দূরে সরিয়ে রাখা চোখের কানাচে
যখন গম্বুজের গন্ধ ছড়ায়
আমিও পিছন ফিরি অনিচ্ছার বাঁকরঙে


দু’হাতের বৃত্তে সবকিছুর স্বপ্ন
কবিতার লাইনে আলাদা হয়ে যায়


লিখে চলি তোমার প্রশংসায় হাজার হাজার স্তবক,
স্তাবক হতে পারিনা!

কবিতাঃ আমি কবি হলে / উপেক্ষিৎ শর্ম্মা


রোদ এলে ভুলে থাকি স্মৃতির কাঁপন
এঘরে ঢোকেনা রোদ কচি শিশু গায়ে মাখে
শীতের অসুখ আমি কবি হলে আনন্দ পেতাম,
লোভী চিত্রকর যেরকম ঘুরেফিরে চুটিয়ে নিসর্গ আঁকে,
পান করে শূন্যতার হিম; অথবা লেপের ওমে বিবাহিত সুখ
পূর্ণ করে নির্জন সংসার কাজে মন কিছুতে আসে না মন থাকে
গাছের হলুদে চোখে কি স্মৃতির ছুঁচ ? আমি কবি হলে পরিত্রাণ পাই ……  

রোদ এলে ভুলে থাকি স্মৃতির কাঁপন
এহাড়ে লাগেনা শীত মজ্জা ফুঁড়ে উঠে আসে
বিবর্ণ পলাশ স্মৃতিরা দুচোখ খুলে হেসে ওঠে বসন্তের
রুমাল উড়িয়ে কবি হলে বিরুদ্ধে যেতাম চিত্রকর যেরকম
ইচ্ছের স্বরূপ বুঝে হালকা হলুদ রঙে ক্যানভাস ভরে ত্রস্ত নিঃশ্বাসে ……

অতএব রোদের আগুনে ছুঁড়ি  থুতু যন্ত্রণা
স্মৃতিরা দুহাত তুলে নাচছে নাচুক আমার আকাশ
আমি চিনি একা ঘর ফাটা জ্যোৎস্নার মত গন্ধবর্ণহীন
ঋতুর বদল অসুখে অশোকে একাকার, একা, দীর্ঘাকায় নির্জনতা……

কবি হলে আমিও যেতাম মানুষের  প্রত্যন্ত গভীরে
স্থির পায়ে চলে যেতাম নারীদের যৌন পাদদেশে স্বৈরাচারী
পুরুষের মত হেঁটে বা অবলীলায়, শীতের সকালে, ফোটাতাম
ফুল, ফোটাতাম  বর্ণময়  জীবনের মূর্চ্ছনাফোটাতাম স্মৃতি সম্ভ্রম……
আমি কবি হলে……..

কবিতাঃ সে এক চন্দ্রাহত / নিবেদিতা ঘোষ মার্জিত


তুমি চাঁদের আলো থেকে কোথায় পালিয়ে যাচ্ছ।
কোন অন্ধকারে?
চিনতে চায়ছিলে কোনও ব্যথা- তীব্র, গহন।
ঐ তো সেই বনতল,...তার পাশে একাই দাঁড়িয়ে আছে তোমার সে সাঁকো।
ঐ তো হলুদ ফুলের জ্বলে ওঠা ছবি,
ঐ তুমি নিজের তুমি... , তোমার নিজের মধ্যে আরো এক তুমি বসে আছ।অবিচল।
বসন্তের ফুলদলে টাটকা চন্দ্রাঘাত। 
ওকি তুমি জ্বালিয়ে দিচ্ছ হাত... শিরোরেখা ,হৃদয় রেখা... যশোরেখা...।
সব পুরে খাক।
না ...না ...না
ওকি কর ক্ষুর হাতে ...উহ্‌... সব রক্ত বহমান।
অত ভালবাসা ধারণের হৃদয় নেই ...
হও ক্ষমাবান।

কবিতাঃ জীবনকে যাপনের গল্প / রিপন দাস


হেমলক অথবা প্যারাসুট যা ইচ্ছে আমায় দে
ঝুলন্ত সময় শুধুই বেচেঁ থাকা যেন এক প্যারালাইসিস রোগী;
দৈনিক ডাল-ভাত কিংবা একেকটি লম্বা দীর্ঘশ্বাস
যাপন করি রাত দিন মাস খুব বেশি হলে আমৃত্যু।
কৈশোরের লাগামহীন দুটো সর্বনাশী পা
ভুল করে হলেও ছুটে না রঙধনুর পিছু পিছু
চার পয়সার লজেন্সে যে মুখ পূর্ণতা পেতো নোনতা লালায়
গাড় প্রয়োজনে সেখানে ক্রমাগত উৎসব সাজে নিকোটিনের .
ডান পাশের ছেলেটি প্রেম করছে উল্কার বেগে
বাম পাশের মেয়েটি ঢেঁকুর তুলছে একটি পরিতৃপ্ত মিলনের,
চোখ পুড়ে যায়
বুক ক্ষয়ে যায়;
হেমলক অথবা প্যারাসুট যা ইচ্ছে আমায় দে
ধু ধু মরুর বিছানায় একটি আল্পনা আঁকি,
ধূলা বালির ফাঁকে ফাঁকে উড়াই আর ছড়াই
উচ্ছ্বাসিত যৌবনের কিছু হাসিগল্পের ফানুস।

অণু-কবিতাঃ সরল পথ / স্বপন রেজা


রোদের ওপাশে
ছায়ার ভীষণ দরকার
তুমি কি জানতে -
পাখিদের মুখের লালা

গোধূলির রং ধুয়েমুছে দেয় প্রতিদিন

অণু-কবিতাঃ একটি কবিতা / দীপ্ত প্রসাদ সিংহ


অদ্ভূত ছন্দে তুমি হেঁটে যাচ্ছ
দোলনা থেকে দোলনায়
পাতার শিরার মতো
গোলাপীর প্রকট ঔজ্জ্বল্যে
                     হে মৃন্ময়ী
মাটিকেও দেখেছি গাছ হয়ে উঠতে

অণু-কবিতাঃ জার্নি / ঈশিতা ভাদুড়ী



একটি পথ। দীর্ঘ। অমসৃণ। 
একটি পথ। ভরপুর বাম্পার। ভয়ানক গর্ত।
এই পথের শেষ?

ধুলোতে নেগেটিভ। উড়ছে সারাপথ। 
মিউজিক নেই। লাইটও নেই। 
এই জার্নির শেষ?

অনু-কবিতাঃ তিনটি অণু-কবিতা / মৌমিতা চক্রবর্ত্তী


(১)
পড়ন্ত দুপুর ধুসর বিকেল
তুই পাখি উড়ছিস নিরন্তর
মন আজ বন্দি বুকের ভিতর
নিজের সাথে বলে কথা অবিরত
                               

 (২) 
  মুখোশের মাঝে মুখের ভিড়
  কেউ কাপুরুষ কেউ বা বীর
 জন মিছিলে সামিল সকল
 মেনে নিচ্ছে চেনা পরাজয়

    
     (৩)   
   ক্লিয়পেট্রার মত মৃত্যু এসে
   গ্রাস করুক এই ব্যর্থ জীবন
   সর্পের দংশনে নীলাভ শরীরে
  রইবে বিজয়ের অম্লান হাসি



CSS Drop Down Menu
আমাদের লেখা পাঠান careofsahitya@gmail.com- এ মেল করে।