প্রত্যেকটি
হৃদয়ঘটিত অনুভূতির রুমাল কোনো না কোনোভাবে
যুক্ত। কিন্তু আজ লিখতে বসে ব্যতিক্রম সুধীজন ! কারন স্প্যাস্টিকের বোতাম সংখ্যা
পড়বার আগে তাদের প্রথম সংখ্যা 'রুমাল' না পড়ুন, চোখ না বোলালে , স্প্যাস্টিকের অন্দর কি বাত , বোতাম এর দূর্গ
পেরিয়ে দেখা দেবেক নাই। শুধু এই সাহিত্য-কলা পা-গলা নমুনা মিলিবে উল্কার সম্পাদকীয়
তে - 'একটার পর একটা নাম হিজিবিজি দিয়ে গোল করে কাটতে কাটতে পেয়ে গেলাম...' তারপরের টা এই মুহুর্তে ইতিহাস, যা কাগজের পরতে পরতে
প্রমাণ করে -
'স্প্যাস্টিক' কোনো মানসিক বন্ধ্যান্ত্ব নয়, এবং তার ভিন্ন ভিন্ন ছাপ প্রকট বা প্রচ্ছন্ন ভাবেই
নিজস্ব।
এ তো গেল ভূমিকা
রীতিনীতি। এবার আসি কঙ্কালে। যাদের ছাড়া এই পত্রিকার দেহ টাই হতো না। তা হল -
বোতাম নিয়ে ইনিয়ে বিনিয়ে কক্ষনো বা দুঃখ ছিনিয়ে , সাহিত্যকর্ম। আমার কোনো বদ অভ্যাস নেই পাঠবিষয়ক, তাই প্রথম পাতা
থেকেই কবতের সাথে দেখা। কখনো কারোর লেখা পড়ে একটা পৃষ্ঠা তেই আবদ্ধ হয়ে যাচ্ছি
ঘন্টা ধরে, কোনো কবিতায় বা এক দুটো লাইন দাগ কেটে গভীর থেকে গভীরে, আবার কিছু কবিতা পড়ে
একটা কথা বাজারের দিকে ছুটে যাচ্ছে , যেখানে - বোনলেস মাটন এর কোনো দাম নেই, তাহা যথার্থ ছিবড়া
মনে হয়... তেমনই যাপন লেস কবিতা হল আমার কাছে তেমনই।
কচি রেজা, শান্তনু মিশ্র, তন্ময় ভট্টাচার্য্য, সুবীর সরকার, রাজেশ্বরী ষড়ঙ্গী -
এনাদের লেখা আমায় বারবার পড়িয়ে নিয়েছে, ভাবিয়েছে,ভাবিয়ে অবশ করে রেখেছে।
আবার কিছু বাক্য বা
কখনো কিছু শব্দবন্ধ আমায় ভয়ঙ্কর আছন্ন করে রেখেছে, যেমন রাজর্ষী মজুমদারের-
'এ শহরে এখন বারিষ।' , রঙ্গীত মিত্রর- ;আমি তো কিছুই বলতে পারিনা... কারন বোতামগুলো ঠিকঠাক
লাগাতেই পারিনি।', শান্তনু মিশ্রের - বোতামের মতো ঝুলে আছে মৌলিক সংযম, গৌরব চক্রবর্তীর 'পথিক' কবিতার চতুর্থ লাইন।
লাইন উদ্ধৃতি দিলাম না কারন পুরো কবিরা না পড়ে এই লাইন এর সুবাস আসেনা, আর বলতে হয়, লাইন ড়া বাদ দিয়ে
কবিতায় আবার আমি আর কিছুই পাইনি। এ কিরকম মায়া কে জানে।
এরপর এসে পড়লাম
প্রবন্ধ গদ্য গল্পে- লাইন ধরে বলাটা বোকামি, কিন্তু শুরুতেই যেটা পড়ে চমকে গেছি, তা গল - অত্রি
ভট্টাচার্য্যের বোতাম সিনেমাবিষয়ক। প্রচুর জানার সাথে , শেখারও রাস্তা লিখে দিয়েছে অত্রি দা। তুষ্টি
ভট্টাচার্য্যের 'বোতামের অন্দর কি বাত',আর অনির্বান বটব্যালের 'নিঃশব্দের বোতামিয়ানা, পায়েল নন্দীর 'বিশেষত বোতাম' কে আমি সাধুবাদ জানাই। দারুন লেখার গতি, স্বচ্ছতা আর লেখার
ইউ টার্ন গুলো। সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'ভাসমান বোতামের দিন'- নামে এক্কেরে সফল। আহা পরন্তাপ! ভালোলাগা জাগে।
ভালোবাসাও। ও=এরপর ধামাকা হচ্ছে- উল্কা দি আর ঋষি সৌরকের যৌথকর্ম কল্পবিজ্ঞান - আন
বাটনড্ । কিছু বলার নয়। শুধু পড়তে হবে বস্। আমি কিছুই বলব না। আর যার গল্প আমায়
আপাদমস্তক ছুঁইয়ে গেল- তিনি হলেন অভীক দত্ত ও তাঁর লেখা- কে কাহার। অভিভূত হলাম।
আর যার লেখায় আমার
ক্রমশ চোখ হারাচ্ছে, সে হল- বিবেক ভট্টাচার্য্য। খুব বেশীদিন হয়নি লিখছে, কিন্তু গল্পে ও যে
আরো পারঙ্গম হয়ে উঠবে। এ আমার একান্ত উচ্চাশা। 'একটি আষাড়ে প্রেম' তারই কথা বলছে। ওকে আরও লিখে যেতে হবে।
এরপর এসে ভালোলাগা
জমাট বাঁধে রোশনি কুহু চক্রবর্তীর লেখা নাটক - বোতাম এ। নাটক বটে তবে এই বিষয়ে
নাটকীয়তা একটু কমানো যেত মনে হয়েছে। তবুও, তা গ্রহণ করা যায়। ভালো লাগা পাতা ওল্টানোর
অনেকক্ষণ পরেও থেকে গেছে।
এরপর এসে
পৌঁছলাম- ইন্দ্রনীল তেওয়ারীর 'সম্পাদক কে
চিঠি'। এদিকে পাতা শেষ হয়ে আসার দুঃখু নিয়ে পড়া শুরু করলাম এবং যা
পড়লাম জন্ম জন্মান্তরেও ভুলিব না। আফসোস হল না, কারন শেষ টা যদি এরকম লেখা দিয়ে হয়, তাহলে আর কষ্ট হয় না সমাপ্তির। কারন, ভাবনা থেমে নেই।
তবে এই পত্রিকা অন্য
উচ্চতায় পৌঁছে গেছে অমিত বিশ্বাসের আঁকা – GANDHAREE THE
MOTHER OF HUNDRED SONS । পাঠকের কাছে
এই ছবি একটা আলাদা পাওনা। অমিত দা কে সাধুবাদ জানাই।
আর এই
ভাবনার নাও এ বইতে বইতেই কখন দেখলাম রুমাল থেকে বেড়াল এর মতো পত্রিকা নয়, এই পৃষ্ঠাগুচ্ছ একটা বই হয়ে গেছে। হ্যাঁ এটা বই। ভবিষ্যতে
বোতামের কি হবে কে জানে। কিন্তু এই বর্তমানের অতীত নিয়ে রিসার্চ হলে, স্প্যাস্টিকের 'বোতাম' সংখ্যা অন্যতম একটা
নিদর্শন হয়ে উঠবে, সে বিষয়ে কোনো
সন্দেহ নেই।
ভুলচুক ,খামতি তো থাকবেই , যেমন- প্রিন্টিং এ কিছু গলদ যার জন্যে পাঠকের কাছে কবিতা বা গদ্যের মানে
সূর্যপ্রণাম থেকে শীর্ষাসন হয়ে যাওয়ার প্রভূত উপায় খোলা। লেখা নির্বাচনে আরও কঠোর
হওয়া খুবই দরকার ছিল কিছু ক্ষেত্রে। কারন একটা কথা আবার বলতে ইচ্ছে করে- বাজারে
বোন লেস মাটন চলেনা বস্! তবে এসব ভুল সম্পাদক সবচেয়ে ভালো বুঝতে পারে, নয়তো পরবর্তী সংখ্যার তাগিদ কমে যায়, আত্মতুষ্টি তে। এবার আপনাদের প্রশ্ন উঠতেই পারে- পরের
সংখ্যার বিষয় তবে কি?
আমি বলব -
এই তো ঠিক ধরেছেন। কী। ঠাট্টা করছি বলছেন।উঁহু, ইতিমধ্যেই আমায় উল্কা দি জানালো নেক্সট আসছে- চাবি !
পাঠকগণ ঘরের
চাবি না ভেঙে এবার তালার কথা ভাবুন। চাবি আসছে ...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন